রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:২২ পূর্বাহ্ন
সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সরকার ভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালনে পরিপত্র জারি করলেও শহীদ মিনার নির্মাণ করার ক্ষেত্রে তেমন কোন ভুমিকা পালন করছেন না বলেন সাহিত্যিক কঙ্কন সরকার । তাঁর ভাষ্য শিক্ষার্থীরা বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য দিন দিন ভুলে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের মাঝে তেমন কোন সারা দেখা যাচ্ছে না।
১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে নির্মাণ করা হয় শহীদ মিনার। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজও শহীদ মিনার নির্মানের ক্ষেত্রে সরকারি ভাবে কোন বরাদ্দ বা পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। সে কারণে অর্ধেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। সেই ধারাবাহিকতায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কারিগরি ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ৪১৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৬৮ প্রতিষ্ঠানে নেই নিজস্ব ও স্থায়ী শহীদ মিনার।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকে ২৫৯টি সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৯০টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। বাকী ১৬৯টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ১৫৯টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে নিন্ম মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান ৮৮টি, মাদ্রাসা ৪৯টি, কলেজ ১৬টি ও কারিগরি ৬টি। সবমিলে শহীদ মিনার রয়েছে মাত্র ৫০টিতে।
মাদ্রাসা সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহ অত্যন্ত অবহেলিত। এরমধ্যে বিশেষ করে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা সমুহের অবস্থা শোচনীয়। অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে নেই কোন উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি উদ্যোগে কোন কিছু নির্মাণ করা অত্যন্ত কষ্টকর । স্বদিচ্ছা থাকা সত্বেও অর্থ, পরিকল্পনা, নজরদারি, কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারণে কোন কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সকল জাতীয় দিবস সমুহ যথাযথভাবে পালন করা হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মদ বলেন, ২৫৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ইতিমধ্যে ৯০টি প্রতিষ্ঠানে স্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে অল্প সময়ের মধ্যে সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, স্বদিচ্ছার অভাবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহে শহীদ মিনার নেই। তবে শহীদ মিনার না থাকলেও দিবস সমুহ পালন করে থাকেন প্রতিষ্ঠান সমুহ। ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারি ভাবে প্রতিষ্ঠান সমুহে শহীদ মিনার নির্মাণ করা একান্ত প্রয়োজন।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোঃ নাজির হোসেন বলেন, বিষয়টি ওইভাবে কখনো ভাবা হয়নি। আসলেই ভাষা ও স্বাধীনতার ইতিহাস ঐহিত্য ধরে রাখার জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা আবশ্যক। আশু এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।